সোমবার, ১৪ মে, ২০১২

সাওতুল হক্ব



صوت الحق
(সাওতুল হক্ব)
 [ সুন্নি আক্বিদা সম্বলিত মাসআলা ও প্রবন্ধ সমাহার ]
                   (১ম খন্ড)

লেখক
মুফতী নুরুল আরেফিন রেজবী  আল আযহারী




صوت الحق
(সাওতুল হক্ব)
[ সুন্নি আক্বিদা সম্বলিত মাসআলা ও প্রবন্ধ সমাহার ]
(১ম খন্ড)
লেখক
মুফতী মোহাম্মাদ নুরুল আরেফিন রেজবী আল-আযহারী

[এম.এ,থিয়োলজী(আযহার বিশ্ববিদ্যালয়,কায়রো,মিশর),আরবী ট্রেনিং(কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়,মিশর),Diploma in English America University,Egypt]



প্রস্তাবনা
বর্তমান মুসলিম সমাজ বিভিন্ন নামধারী আলেম ও ছদ্মবেশী বৃটিশ দালালের প্ররোচনায় জর্জরিত হয়ে ও তাদের অপপ্রচারে বশিভূত হয়ে নিজস্ব কৃষ্টিকলাপ কে এবং কোরান ও হাদিস এর প্রকৃত বাণীকে ভুলে যেতে বসেছে।দীর্ঘ ১৪০০ বছর ধরে যা চলে আসছিল সে সকল সঠিক কার্যকলাপকে দুরে সরিয়ে দিয়ে ওই সকল বাতিল সম্প্রদায় নিজেদের বৃটিশ প্রলোভিত ওহাবী মতাদর্শকে প্রাধান্য দেয়া শুরু করে দিয়েছে।তাদের চলন–বলন প্রভূতিকে যদি গভীর ভাবে লক্ষ্য করা যায় তাহলে সহজেই বুঝতে পারা যাবে যে এরা আসল নয় বরং ছদ্মবেশি শয়তান।এ সকল বাতিল মতাদর্শ হতে সমাজকে রক্ষা করতে ও ওহাবী মতাবলম্বী জামায়াতের হাত হতে নিষ্কৃতি পেতে আমাদের প্রয়োজন সঠিক ভাবে কোরান ও হাদিস অনুযায়ী ইসলামের আক্বীদা বা মুলনীতি সম্পর্কে জানার। আর এই উদ্দ্যেশেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা বাংলার ভাষায় লিখিত “সাওতুল হক্ব” বা সত্যের  আওয়াজ, যার মধ্যে সঠিক সুন্নি আক্বীদা সম্বলিত কয়েকটি ফতওয়া ও প্রবন্ধ সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে।এটিকে আক্বীদা গাইড বললেই ভুল হবে না।এর দ্বারা মুসলমান সমাজ যেমন তাদের আক্বীদা সম্পর্কে জানতে পারবে অনুরুপ বাতিলদের হতে নিজেদের রক্ষা করতে পাবে বলে আশা রাখি।এর প্রথম খন্ড পাঠকদের হাতে তুলে দিতে পেরে যেমন আনন্দিত ,অনুরুপ এ দ্বারা সমাজ আক্বীদা সম্পর্কে সচেতন হলে আরও অধিক আনন্দিত হব ।আল্লাহ রব্বুল আলামীন যেন বাতিলদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে সঠিক ভাবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের উপর ক্বায়েম ও দায়েম রাখেন।আমীন বে জাহে সাইয়েদিল মুরসালিন।
                                          খাকপায়ে নুরী
                      মোহাম্মদ নুরুল আরেফিন রেজবী



                                                                                                                                                       



 











“আমার এই ক্ষুদ্র পুস্তকটি পঞ্চদশ শতকের মহান মুজাদ্দিদ ,মুজাদ্দিদ ইবনে মুজাদ্দিদ হুযুর পুর নুর মুফতীয়ে আযাম হিন্দ মোস্তাফা রেজা খান নুরী ক্বাদেরী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর খেদমতে পেশ করলাম”







সূচিপত্র
                
                           বিষয়                                                     পৃঃ                             
1.       আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কিত আক্বীদা                 
2.       আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বাঈদ
        শাস্ত্রের ইমাম কে ?
3.       মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম)
       উদযাপন শরীয়তসম্মত
4.       নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম কে  সাধারণ
      মানুষ  কিংবা ভাই বলে আখ্যায়িত করা হারাম ।
5.       হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফজিলত
6.       হযরত আমীরে মোআবিয়া রাদীয়াল্লাহু আনহুর প্রতি
       বিরুমন্তব্যকারীদের জন্য শরীয়তের বিধান
7.       সাহাবাদের দৃস্টিতে রসুল প্রেমই ইমানের মুল ভিত্তি
8.       ইলমে হাদীসে ইমাম  আজম আবু হানীফা
       রাদিয়াল্লাহু আনহুর  অবদান                                                                             

9.       মাযহাব অনুসরণ ওয়াজিব

10.   আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন সম্পর্কে শরীয়তের বিধান

11.   উরস পালন কোরান হাদিস সম্মত
12.   প্রচারণার ধুম্রজালে ইতিহাসের পাতা থেকে অদৃশ্য
       ভারত  তথা এশিয়ার মহাপন্ডিত
13.সহযোগী পবিত্র গ্রন্থ সমুহ

…………………………..



























بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তায়ালা সম্পর্কিত কয়েকটি আক্বীদা

১ম আক্বীদাঃ-আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় । তাঁর যাত (ব্যক্তিসত্ত্বা),সিফাত(গুণাবলী),কাজ,হুকুমাদি ও নাম সমুহের ক্ষেত্রে কেউ শরীক নাই। (কোরান শরীফ,উসুলে বায়দাবী)
২য় আক্বীদাঃ-তাঁর অস্তিত্ব অপরিহায।তাঁর কোন আদি ও অন্ত নেই। (শারহে আক্বাঈদে নসফী২৩ও২৬পৃঃ,কিতাবুল আরবাইন ৯৩ পৃঃ,আক্বীদাতু তাহাবী প্রভৃতি)।
৩য় আক্বীদাঃ-তিনিই এক মাত্র ইবাদত বা উপাসনার যোগ্য ।তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন বরং সমগ্র জগৎ তাঁরই মুখাপেক্ষী (কোরান শরীফ)
৪ নং আক্বীদাঃ-তিনি কারো পিতাও নন,পুত্রও নন এবং তাঁর কোন স্ত্রীও নেই।যে তাঁর পিতা বা পুত্র আছে বা স্ত্রী আছে বলে দাবী করে,সে কাফির। (কোরান শরীফ)
৫ ম আক্বীদাঃ-কোন মন্দ কাজ করে তাক্বদীরের দিকে ইশারা করা বা আল্লার ইচ্ছা বলা  খুবই খারাপ। বরং ভাল কাজকে আল্লার দিকে এবং মন্দ কাজকে কু-প্রবৃত্তির দিকে ইশারা করাই হল শরীয়ত সম্মত । )বাহারে শরীয়ত ১ম খন্ড ৮পৃঃ)
৬ ষ্ঠ আক্বীদাঃ- আল্লাহ হলেন আসল রিযিকদাতা।ফেরেস্তা,ও অন্যান্যগণ হলেন বাহক ও পরিবেশক। (বাহারে শরীয়ত ১ম খন্ড ৫ পৃঃ)
৭ম আক্বীদাঃ-আল্লাহ তায়ালা দিক,কাল,গতি,স্থিতি,আকার,আকৃতি এবং যাবতীয় অঘটন থেকে পবিত্র ।  (মুসায়েরা৩৯৩পৃঃ,মুসামেরা৩১পৃঃ,বাহারে শরীয়ত ১ম খন্ড ৮ পৃঃ)আল্লাহ কে ওপর ওয়ালা বলা নিষিদ্ধ।

আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বাঈদ শাস্ত্রের ইমাম কে ?
আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বাঈদ শাস্ত্রের ইমাম হলেন হযরত ইমাম আবুল মানসুর মাতুরিদী রাদিয়াল্লাহু আনহু। তিনি চতুর্থ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ এবং  হানাফী মাযহাবের মুকাল্লিদ ও মুজতাহিদ ছিলেনতিনি আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের প্রতিটি বিষয়ের শুদ্ধ আক্বীদা নিরুপণ করেন তাই তাঁকে আক্বাঈদ শাস্ত্রের ইমাম বলা হয় তাঁর পবিত্র জীবন মুবারকের ব্যাপ্তীকাল ২৭০ (মতান্তরে ২৭১) হিজরী থেকে ৩৩৩ হিজরীঅপর  এক আহ্‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বাঈদ শাস্ত্রের ইমাম হলেন হযরত আবুল হাসান আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু যিনি শাফেয়ী মাযহাব মতাবলম্বী।






2
بسم الله الرحمن الرحيم
মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম )উদযাপন শরীয়তসম্মত অশেষ সওয়াবের কাজ

মহান আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত নেয়ামতের সংখ্যা অগণিত।তন্মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত হলেন হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম।যা কোরান পাকে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন আমার প্রিয় হাবিব কে প্রেরন করে আমি তোমাদের উপর বড়ই এহসান করেছি।সুতরাং বোঝা গেল যে,হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের শুভাগমনই হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত সমুহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত।আর এই শ্রেষ্ঠ নেয়ামত প্রাপ্তির উপর শুকরিয়া স্বরুপ খুশি উদযাপন শুধু বৈধ্যই নয় বরং আবশ্যিক।

**হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের শুভাগমন
(মিলাদুন্নবী)উপলক্ষে ঈদ বা খুশি মানানো কোরানের আলোকেঃ-
 <১> সুরা ইউনুস ১১ পারা আয়াত নং ৫৮
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُون
অর্থাৎ “হে রসুল(সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম)আপনি বলুন,আল্লাহর নেয়ামত ও ফজল, তাদের(মানব সম্প্রদায়ের) উচিত সেই নেয়ামত প্রাপ্তির উপর খুশি উদযাপন করা।উক্ত নেয়ামতের শুকরীয়া আদায় করা সমগ্র ধন-সম্পত্তির চেয়ে উত্তম”।
উক্ত আয়াতের মধ্যে আল্লাহর তায়ালার তরফ হতে প্রাপ্ত ফজল ও রহমতের জন্য জন্য খুশি মানানোর হুকুম দেয়া হয়েছে।হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম হলেন সমগ্র জগতের জন্য শ্রেষ্ঠ নেয়ামত,যাঁকে আল্লাহ রব্বুল আলামিন পবিত্র কোরানে সমগ্র জগতের জন্য রহমত বলেছেন।সুতরাং তাঁর শুভাগমনই হল সকল উম্মতের জন্য শ্রেষ্ঠ নেয়ামত এবং এ উদ্দেশ্যে খুশি মানানো,স্বাদকা করা,হুযুরের সিরাত আলোচনা করাই হল কোরানে বর্ণিত হুকুম পালন করা।আর এ ব্যাপারে অস্বীকার করায় হল কোরানের হুকুম কে অস্বীকার করা।
<২> সুরা মায়েদা ৬ পারা আয়াত নং১১৪
قَال عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا
مَآئِدَةً مِّنَ السَّمَاء تَكُونُ لَنَا عِيداً لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا
অর্থঃ-মারয়াম তনয় ঈসা আলায়হিস সালাম আরয করলেন হে আল্লাহ,হে প্রতিপালক!আমাদের উপর আকাশ থেকে একটা খাদ্য খাঞ্চা অবতরণ করুন,যা আমাদের জন্য ঈদ(আনন্দ উৎসব)হবে-আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য।
এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হল যে,যে দিবসে আল্লাহ তায়ালার খাস রহমত নাযিল হয়,সেদিন কে ঈদের দিন হিসাবে উদযাপন করা,আনন্দ প্রকাশ করা,ইবাদত করা এবং আল্লার শুকরিয়া জ্ঞাপন করা আল্লার প্রিয় বান্দাদের অনুসৃত পথ।আর এতে সন্দেহ নেই যে,বিশ্বকুল সর্দার(সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম)-এর শুভাগমন আল্লার তায়ালার সবচেয়ে মহান নেয়ামত এবং সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত।এ কারনে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর বরকতময় জন্মের দিনে আনন্দ উদযাপন করা এবং মিলাদ শরীফ পাঠ করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা ও খুশি প্রকাশ করা পছন্দনীয় ও প্রশংসনীয় কাজ এবং আল্লার মকবুল বান্দাদেরই ত্বরীকা।

**মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম পালনের বিধান হাদিসের আলোকেঃ-
<১>হযরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম কে একবার জিজ্ঞাসা করা হল যে, তিনি কেন প্রতি সোমবার রোযা রাখেন?প্রত্যুত্তরে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ঈরশাদ করেন “এ জন্য যে ওই দিনে আমার জম্ম হয়েছে এবং আমার উপর কোরান নাযিল শুরু হয়েছে”  (The Prophet was asked about fasting on Monday.He explained,“I was born on that day and Revelation(of the Holy Quran) also began on it”)(মুসলিম শরীফ 368পৃঃ كتاب الصيام,বায়হাক্বী শরীফ হাদিস নং38182 ,নেসায়ী শরীফ হাদিস নং 2777)
উক্ত হাদিস হতে যে সকল বিষয় সাবস্ত্য তা হলঃ-১.সোমবারের দিন রোযা সুন্নাত কারন এটা হযুরের জম্মের দিন। ২.হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম স্বয়ং সোমবারের রোযা রেখে নিজের জম্মদিন(মিলাদুন্নবী)পালন করেছেন।৩.উম্মতদের কেও মিলাদুন্নবী পালন করার গুরুত্বকে বর্ণনা করেছেন।
<২>হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম নিজের মিলাদ শরীফ কে বকরী যাবেহ দ্বারা মানিয়েছেন এবং সাহাবাদের ও দাওয়াত দিয়েছেন।
{বায়হাক্বী(আহসানুল কুবরা)9খন্ড300পৃঃহাদিসনং43,ফতহুল বারী9খন্ড595পৃঃ,তাহযিবুল আসমাওলোগাত2খন্ড557পৃঃ,তাহযিবুল তাহযিব5খন্ড340পৃঃ,আহসানুল কুবরা}

মিলাদুন্নবী অস্বীকার কারীদের পূর্ব কিছু ওলামাদের মন্তব্যঃ-
<১>দেওবন্দী,ওহাবীদের সম্মানিত আলেম হযরত ইমদাদুল্লাহ মাহাজিরে মাক্কী রহমাতুল্লাহ আলায় মিলাদুন্নবী পালন,জুলুস প্রভুতির জায়েজের দলীল প্রসংগে বলেন “হারামাইন শরীফাইনে  মিলাদুন্নবী পালনই আমাদের জন্য উপযুক্ত দলীল”         (সামাইলে ইমদাদিয়া 147পৃঃ,ইমদাদুল মুস্তাক50পৃঃ)
<২> ইমদাদুল্লাহ মাহাজিরে মাক্কী রহমাতুল্লাহ আলায় বর্ণনা করেছেন “ফক্বীরের পানশালা(অভ্যাস) হল এটাই যে ,মিলাদ মহফিলে যোগদান করি এমন কি বরকতের জন্য প্রতি বছর মিলাদুন্নবী পালন ও করি।
                                                                (ফায়সালায়ে হফত মাসয়ালা 6 পৃঃ)
<৩>গায়ের মুকাল্লিদের ইমাম নবাব সিদ্দিক হাসান ভুপালি মিলাদ প্রসংগে মন্তব্য করেছেন “যে ব্যক্তি মিলাদ শুনে খুশি না হয়, আল্লার শ্রেষ্ঠ নেয়ামত হুযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের শুভাগমনে খুশি না মানায় সে মুসলমান নয়।                                                                                    (আশশামামাতুল আম্বারিয়া১২পৃঃ)
   মিলাদুন্নবীর দিনে মিলাদুন্নবী মাসে অশেষ সাওয়াবের জন্য যা যা করণীয়ঃ
1.     হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ফযীলত বর্ণনা করা।
2.      জম্ম কালের  উল্ল্যেখযোগ্য ঘটনা সমুহ বর্ণনা,মোযেযা সমূহ বর্ণনা
3.      জুলুস বের করা,পারষ্পরিক খুশি বন্টন করা।
4.      বাড়ি,দোকান,বাজার প্রভৃতিতে আলোও পতাকা দ্বারা সজ্জিত ক রা
5.      ইসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে শরবত ও খাদ্য খাওয়ানো।
6.      পবিত্র নাত ও মিলাদ মহফিল উদযাপন করা।
                                                              (আশিকো কি ঈদ 12 পৃঃ)

(Many activities include:
1.      Night-long prayer meetings.
2.      Marches and parades involving large crowds. 
3.      Sandal rites over the symbolic footprints of the Prophet Muhammad.
4.      Festive banners and bunting on and in homes, mosques and other buildings.
5.      Communal meals in mosques and other community buildings.
6.      Meetings to listen to stories and poems (nats) about Mohammad's life, deeds and teachings.
7.      Exhibitions featuring photos of mosques in the holy cities of Mecca and Medina in Saudi Arabia.)
******



নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম কে সাধারণমানুষ কিংবা ভাই বলে আখ্যায়িত করা হারাম নবীদেরকে বশরবা ইনসানবলে আহবান করা, কিংবা হুযুর (আলাইহিস সালাম ) কে হে মুহাম্মদ’, ‘হে ইব্রাহীমের পিতা’, ‘হে ভাই’, ‘হে দাদা’, ইত্যাদি ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক নির্দেশক শব্দাবলী দ্বারা সম্বোধন করা হারামবা নিষিদ্ব যদি কেউ অবমাননার উদ্দেশ্যে এভাবে সম্বোধন করে, তাহলে কাফিরবলে গণ্য হবে
আলমগীরীও অন্যান্য ফিকাহ এর কিতাবসমূহে আছে, যে ব্যক্তি হুযুর (আলাইহিস সালাম) কে অবমাননা করার উদ্দেশ্যে هَذَا الرَّجُلُ এ লোকটিবলে অভিহিত করে, সেকাফিরতাকে বরং ইয়া রাসুলুল্লাহ ! ইয়া শফীয়াল মুযনেবীন’“ইত্যাদি সম্মান সূচক  শব্দাবলী দ্বারা স্মরণ করা জরুরী






বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফজিলত(সংক্ষেপে)

আল্লাহর নিমিত্তে সকল প্রশংসা যিনি মহান,সকল দরুদ রসুলুল্লাহর,আল্লাহ বাড়িয়েছেন যার সম্মান।
 পুর্বে আমার লিখিত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহুর প্রতি বিরুপ মন্তব্য ও গালিগালাজ কারিদের প্রসঙ্গে সকল ওলামাদের ধারণা নামক ফাতওয়াটি প্রকাশিত হবার পর অনেকেই এই মহান সম্নাণিত সাহাবার শান কোরান হাদিসে কিরুপ ভাবে বর্ণিত হয়েছে তা লেখার জন্য আবেদন করেছেন।যদিও হযরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু শান কোরান ও হাদিসের আলোকে পুস্তাকারেহযরত আমীরে মোয়াবীয়া সাহাবী”প্রকাশিত হয়েছে,তথাপি সংক্ষেপে অল্প কয়েকটি এখানে বর্ণনা করা হল।
এক দিকে তিনি যেমন প্রথম সারীর সাহাবাদের মধ্যে ছিলেন,অপর দিকে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায় হে ওয়া সাল্লাম এর উপর নাযিল কৃত ওহী লিপিবদ্ধ করে ইসলামের মধ্যে সুমহান মযার্দা লাভ করে আছেন।
 হযরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফজিলতঃ-(কোরান শরীফ হতে)
১)সুরা হাদিদ ,আয়াত নং ১০- লা ইয়াস্ তাবী মিন কুম.....তামালুনা খাবীর অর্থঃ-তোমাদের মধ্যে সমান নয় ওই সকল লোকেরা(সাহাবীগণ)যারা মক্কা বিজয়ের পুর্বে ব্যয় ও জেহাদ করেছে এবং তারা মযাদায় ওই সকল লোকেদের(সাহাবী)চেয়ে উত্তম যারা বিজয়ের পর ব্যয় ও জেহাদ করেছে এবং তাদের সবার সাথে আল্লাহ জান্নাতের ওয়াদা করেছেন।
 এই আয়াতটি হযরত মুয়াবিয়া সহ ওই সকল সাহাবীদের শানে নাযিল হয়েছে যারা মক্কা বিজয়ের পুর্বে পরে ইসলামের পথে ব্যয় ও জেহাদ করেছেন এবং এরা সকলেই হলেন জান্নাতি।(হযরত মুয়াবিয়া হুনাইনের যুদ্ধে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায় হে ওয়া সাল্লামের সহিত অংশ গ্রহন করেছিলেন)
২) সুরা তাওবা,আয়াত নং ১১৭,লাক্বাদ তাবাল্লাহু আলান নবীই ই----র উফুর রহিম অর্থঃ আল্লাহর রহমত সমুহ ধাবিত হল নবীর এবং মুহাজির ও আনসারের প্রতি যারা সংকট কালে হুজুর পাকের সংগে ছিল।
হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু হলেন ওই মহান সাহাবী যিনি গযওয়া এ তাবুক নামক যুদ্ধের সংকট কালে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর সাথে ছিলেন।
  (আরোও অনেক কয়েকটি আয়াত যা হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর শানে নাযিল হয়েছে,সংক্ষেপের কারনে এখানে শুধু দুটি দেওয়া হল।)

হযরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফজিলতঃ-(হাদিস হতে)
৩)বোখারী শরীফ ২য় খন্ড,হাদিস নং২৯২৪
হযরত উম্মে হারাম বিনতে মুলহান রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন আমি হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি 
أول جيش من أمتي يغزون البحر قد أوجبوا অর্থঃ-আমার উম্মতের যে প্রথম সৈন্য দলটি নৌ অভিযানে অংশ নেবে,তারা নিজেদের জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে নিয়েছে।(the first army of my ummah nation that will invade the sea,all the sins of its solders will be forgiven)
মুহাদ্দিস গণ বলেন এই হাদিসটি হযরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর শানে বর্ণিত হয়েছে কারন তিনিই হলেন সর্বপ্রথম সেই সাহাবী যার নেত্বত্বে সর্বপ্রথম সৈন্যদল নৌ অভিযানে অংশ গ্রহন করেছিলেন এবং এরা সকলেই হলেন জান্নাতী যার সু সংবাদ হযুর পুর্বেই দিয়ে ছিলেন।(সংক্ষেপের কারণে শুধু একটি হাদিস বোখারী শ রীফ হতে বর্ণিত হল)
৪)তিরমিযী শরীফ ২য় খন্ড ২২৪ পৃঃ,
 হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম হযরত মুয়াবিয়ার জন্য দোওয়া ক রেছিলেন  اللهم اجعله هادياً مهدياً واهد به হে আল্লাহ মুয়াবিয়া(রাদিয়াল্লাহু আনহু)কে হাদি(হেদায়াতকারী)ও মাহদী(হেদায়াত প্রাপ্ত)বানিয়ে দাও এবং তার মাধ্যমে মানুষ কে হেদায়াত প্রদান কর।“O Allah!Make him a guide,guided(to right path ),and guide (others)through him”
৫)ইমাম আহমদ ফাদায়েলু সাহাবা একটি হাদিসের মধ্যে উল্ল্যেখ করেছেন হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম বলেন اللهم علم معاوية الكتاب والحساب وقه العذاب হে আল্লাহ মুয়াবিয়াকে কেতাব(কোরান)ও হেসাবের জ্ঞান দান করো এবং তাকে আযাব থেকে রক্ষা করো।“O Allah !Teach Muaviya the book(holy Quran)and math,and protect him from punishment”
৬)মুসান্নাফ ইবনে আব্দির রাযযাক হাদিস নং ২০৮৫,আল বেদায়া৮ম খন্ড১৩৫পৃঃ,আল ইসাবাহ ৩য় খন্ড ৪১৩ পৃঃ
হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর জ্ঞান,প্রজ্ঞা এবং তাকওয়া ও ধার্মিক তা সর্ম্পকে সাহাবীয়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর মন্তব্য হল শাসন ক্ষমতার জন্য মুয়াবিয়ার চেয়ে উপযুক্ত কেউ আমার নজরে পড়েনি।
৭)তারিখুল ইসলাম গ্রন্থ আল্লামা হাফেয যাহবী একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন হযুর পাক হযরত মুয়াবিয়ার জন্য দোওয়া করেছিলেন হে আল্লাহ মুয়াবিয়ার সিনাকে জ্ঞান দারা পুর্ণ করে দাও
এ সকল ছাড়াও যে সকল হাদিস গ্রন্থে হযরত মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহুর শান বর্ণিত হয়েছে তার মধ্যে মুসলিমশরীফ,মিশকাতশরীফ,আলবেদায়া,ইবনেখালদুন,আলবেদায়া অ নেহায়া প্রভূতি অন্যতম।

بسم الله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه أجمعين
 হযরত আমীরে মোআবিয়া রাদীয়াল্লাহু আনহুর প্রতি বিরুপ মন্তব্য (গালি গালাজ,সাহাবী নয় প্রভুতি ধারনা) পোষন কারীর প্রতি ওলামায়ে কেরামগনের মন্তব্য
  আমীরে মোআবিয়ার শানে গুস্তাখ বা বিরুপ মন্তব্যকারি প্রসঙ্গে সকল ওলামা যেমন ওলামায়ে সলফ(আগের),ওলামায়ে খলফ(পরের),আরব,মিসর তথা সমগ্র আরব বিশ্বের ওলামায়ে কেরাম ফতোয়া দিয়েছেন যে গুস্তাখ রা অবশ্যই ইসলাম বর্হিভুত তাদের জন্য শাস্তি অপরিহার্য তাদের কে মজলিস হতে বিতারিত করা প্রয়োজন।
নিম্নে বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামদের মন্তব্য তুলে ধরা হলঃ-
 ১**ইবনে আসাকির তারিখে দামাস্ককেতাবের ৫৯ খন্ডের ২১১ পৃষ্ঠায়,আজ রা কেতাবু-শ শরীয়া৫ম খন্ড ২৪৬৭ পৃষ্ঠায়
. فقال : على أولئك الذين يلعنون لعنة الله يشتمون يلعنون معاوية قوماً قيل للحسن : يا أبا سعيد , إن
হযরত হাসান কে বলা হল যে হে আবু সাইদ একদল লোক রয়েছে যারা হযরত মোআবিয়া কে গালিগুলুজ করে ও অভিশাপ দেয়,তখন হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু বল্লেন যারা এরুপ করে তাদের উপর আল্লাহর লানাত বর্ষিত হয়।
২**ইবনে আসাকির তারিখে দামাস্কএর ৫৯ খন্ড ২১১ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন আব্দুল্লাহ বিন মোবারক বলেছেন আমাদের মধ্যে যদি কেউ আমীরে মোআবিয়া র দিকে বক্রভাবে তাকাই অথবা কু-কথা বলি তা হলে অব্যশই সাহাবার শানে বে আদবী করা হবে,আর সাহাবাদের শানে যারা গুস্তাখি করল তারা জাহান্নামী।
৩**কাজী আইয়াদ আশ শেফা ফি হুকুকিল মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলায় হে অ সাল্লাম২য় খন্ড ৪৯৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন

« قال مالك رحمه من شتم أحداً من أصحاب النبي أبا بكر أو عمر أو عثمان أو علي أو  معاوية
أو عمرو بن العاص فإن قال : كانوا على ضلال وكفر
হযরত মালিক এর মতে যদি কেহ সাহাবীয়ে রসুলদের মধ্যে, যেমন হয রত আবুবকর,হযরত ওমর,হযরত ওসমান,হযরত আলি,হযরত মোআবিয়া ও ওমর বিন আস প্রমুখদের গালি দেয় ,সে গোমরাহ ও কুফরের মধ্যে।
৪**ইবনে আসাকির তারিখ দামাস্ক৫৯ খন্ড ২১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন মুহাম্মদ বিন মুসলিম তিনি ইব্রাহিম বিন মসিরাহ হতে শুনেছেন-আমি হযরত  ওমর বিন আব্দুল আযীয কে দেখেছি তিনি বেতের প্রহার এক মাত্র তাদের কেই করতেন যারা হযরত মোআবিয়া রাদিয়াল্লাহুর শানে বেআদবী করত।
৫**খেলাল আস-সুন্নাহ২য় খন্ড ৪৩৪ ও ৬৫৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন আবি আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করা হল ওই সকল লোকেদের সর্ম্পকে যারা বলে আমরা মোআবিয়া কে কাতিবে ওহী ও মোমিনের মামা
বলে মানি না,প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন هذا قول سوء رديء ، يجانبون هؤلاء القوم ولا يجالسون .এটা খুবই খারাপ ধারনা,এই সকল লোকেদের বিতারিত করা ও এদেরকে বয়কট অপরিহার্য
৬**ইমাম নেসাপুরীফি মাসাইলে ইবনে হানি আন-নেসাপুরি১ম খন্ড৬০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন যারা আমীরে মোআবিয়ার শানে কটু কথা বলে لا يصلى خلفه ولا كرامة না তাদের পিছুনে নামায জায়েয না তাদের প্রতি সন্মান প্রদর্শন

৭**ইবনে তইমিয়ার মজমুউল ফাতোয়া৩৫ খন্ড৫৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,যারা হযরত মোআবিয়ার প্রতি লানত এর ধারনা রাখে তাদের প্রতি রায় প্রসঙ্গে ইবনে তইমিয়াকে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রত্যুত্তরে বলেন
যারা সাহাবাদের মধ্যে কোন একজন কে যেমন মোআবিয়া বিন আবু সুফিয়ান,ওমর বিন আস প্রমুখদের গালী দিল فإنه يستحق للعقوبة البليغة باتفاق أئمة الدين অবশ্যই সে শাস্তির যোগ্য ।আর এটাই হল সকল ওলামাদের রায়।
৮** আস সুন্নাহ২য় খন্ড৪৪৮পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে হযরত আব্দুল্লা কে কোন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন হে আব্দুল্লাহ আমার এক মামা আছে যে হযরত মোআবিয়ার শানে গুস্তাখি করে,তার সহিত কি খাওয়া দাওয়া চলবে প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন তার সহিত খাওয়া দাওয়া করা হারাম।
         এ সকল ছাড়াও আর ও বহু পুস্তক যেমন الإستيعاب 671, البداية والنهاية 8/139, طبقات الحنابلة 1/285  প্রভুতিতে ও অনুরুপ উক্তি করা হয়েছে।
উপরি উক্ত আলোচনার দারা পরিষ্কার হযরত মোআবিয়া রাদিয়াল্লাহু শানে গুস্তাখী শরীয়ত বিরোধী কাজ।
অতএব ওই সকল ভাইদের প্রতি যারা হযরত মোআবিয়ার প্রতি কু-মন্তব্য করেন কর জোড়ে আবেদন তারা যেন এরুপ হতে বিরত থাকেন এবং তওবা করেন।
 এ প্রসঙ্গে আরও তথ্য পেতে visit করুন www.amir moavia.com,এছাড়াও পড়ুন আমার লিখিতহাদিসের আলোকে আমীরে মোআবিয়া

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
সাহাবাদের দৃস্টিতে রসুল প্রেমই ইমানের মুল ভিত্তি

হযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর প্রতি ভালবাসা ইমানের প্রানশক্তি ,যা ছাড়া আল্লাহকে সন্তুস্টি করা যায় না।নবীর প্রতি ভালবাসার অর্থ হল হযুরের চাল-চলন,কথা বার্তা,উঠা-বসা,শয়ন-স্বপন ,নিদ্রা-জাগরন,পানাহার ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর অনুকরণের মাধ্যমে নিজ জীবন কে প্রতিষ্ঠিত করা। হয রত ইবনে রজব হাম্বলি এর মতে রসুল পাকের প্রতি ভালবাসায় হল ইমানের মুল ভিত্তি এবং এটাই হল আল্লাহর প্রতি ভাল বাসার মিলিত রুপ।এ পর্যায়ে সাহাবাকেরামের দৃস্টান্ত সৃষ্টির ইতিহাসে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।কবির কবিতায়,প্রাবন্ধিকের প্রবন্ধে সাহাবায়ে কেরামে রসুল প্রেমের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হয়নি ।যাঁরা সকলে সন্তান সন্তুতি ,পিতা-মাতা,সহায়সম্পদ,ইত্যাদিকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন হজুরের ভাল বাসার নিমিত্তে।**যার হাতে আমার প্রান,তোমরা ততক্ষন পর্যন্ত কেউই পরিপুর্ন ইমানদার হতে পারবে না,যতক্ষন আমি তার নিকট নিজ পিতা মাতা ,সন্তান ও সকল মানুষ হতে প্রিয় না হই।(বোখারী শরীফ ১ম খন্ড ১৪ পৃঃ)
হযরত আবুবকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহু ও রসুল প্রেমঃ-
ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহুর উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়ার এক মাত্র কারণ হল অত্যাধিক মাত্রায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালবাসা ।হযরত আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর রসুল প্রেম কে এক পাল্লায় এবং সকল উম্মতে রসুলের প্রেম কে আর এক পাল্লায় রাখা হয় তাহলে হযরত আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর পাল্লা অধিক ভারী হবে।স্বীয় প্রান অপেক্ষা হযুর কে অধিক ভালবাস তেন।যার কারণে হযুর বলেছেন দুনিয়াতে আমি প্রত্যেক মানুষের কৃত কর্মের পরিপুর্ণ প্রতিদান দিয়েছি কিন্তু সিদ্দিকে আকবরের ত্যাগের প্রতিদান আদায় করতে পারিনি।হাশরের ময়দানে স্বয়ং রব্বুল আলামিন তাঁকে ওই প্রতিদান দান করবেন। হযরত আবুবকর রাদিয়াল্লাহু হুযুরের প্রেমে সর্বস্ব বিলিন করেছিলেন ইসলামের কল্যানে।হযুর ইরশাদ করেছেন দুনিয়াতে এমন কোন ব্যাক্তির উপর সুর্যোদয় ও সুর্যাস্ত হয়নি ,যে পয়গম্বরদের পর হযরত আবুবকর থেকে উত্তম ও শ্রেষ্ট।হযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম হযরত আবুবকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু আনহুর প্রেমকেই শ্রেষ্ঠ বলেছেন।(রুহুল বায়ান)
হযরত ওমর ফারুখ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও রসুল প্রেমঃ-
আব্দুল্লাহ ইবনে হেশাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বনর্ণা করেছেন,একদা আমরা নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের সহিত উপস্থিত ছিলাম হুযুর পাক হযরত ওমর ফারুখ রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাত ধরে ছিলেন।ওমর ফারুখ রাদিয়াল্লাহু বললেল ইয়া রসুলাল্লাহ ! নিশ্চয় আপনি আমার নিকট সকল কিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় শুধুমাত্র আমার জীবন ব্যাতিরেকে।হযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম বল লেন,এটা যথেষ্ট নয়,ওই মহান সত্ত্বার শপথ !যার হাতে আমার প্রান-যতক্ষন পর্যন্ত না তোমার প্রাণ ও জীবন অপেক্ষা আমি তোমার নিকট অধিক প্রিয় হয় যথেষ্ঠ হবে না।অতঃপর হযরত ওমর ফারুখ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন হাঁ খোদার কসম এখন আপনি আমার নিকট আমার প্রাণের অপেক্ষা অধিক প্রিয়।হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম বললেন,হে ওমর এখন পরিপুর্ণ মোমিন হয়েছ।***হযরত ওমর ফারুখ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রেমের  আর ও পরিচয় আমরা পাই হযুর পাকের ওফাতের সময় ।হযুরের প্রেমে এমনই মত্ত ছিলেন যে হুযুরের ওফাত কে প্রথম দিকে মেনে নিতে পারেন নি।এমনকি এভাবে বলে ছিলেন,কে বলে হযুর আমাদের মধ্যে নেই;যে বলবে তিনি ইন্তেকাল ক রেছেন,তার গর্দান উড়িয়ে দেব।(তাবারী,তারীখুল উমাম ২/২৩৩)
হযরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু ও রাসুল প্রেমঃ-
একবার হযরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকেও জিজ্ঞাসা করলেন হুযুরের সহিত কেমন ভালবাসা আপনারা রাখেন?উত্তরে হযরত আলি বললেনমহান আল্লাহর নামে শপথ!হযুর আমাদের কাছে আমাদের ধণ-সম্পদ,সন্তানসন্ততি,পিতা-মাতা অপেক্ষা অধিক প্রিয় ছিলেন।হুযুরের প্রেমে এতই বিহ্বল হতাম যেমন ভাবে তৃষ্ণার্ত তৃষ্ণার সময় পানির জন্য বিহ্বল হয়।(শেফা ২৭৪ পৃঃ)
হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা ও রসুল প্রেমঃ-
হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা নবী পাক তথা স্বীয় পিতাকে নিজ প্রানের চেয়েও অধিক ভাল বাস তেন ।হযুর পাক নিজেই তার সার্টিফিকেট দিয়ে বলেছেন ফতেমা আমার প্রাণের টুকরো।হুযুরের প্রতি তাঁর ভালবাসা এমনই পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল যে হুযুরের ওফাতের পর কখন ও হাসেননি ।(আল অফা বি আহওয়ালে মোস্তাফা ৮০৩ পৃঃ)
হযরত আবু তালহা ও রসুল প্রেমঃ-
হুদায় বিয়ার সন্ধিক্ষণে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের  পবিত্র থু থু কে নিজ শরীরে মেখে ছিলেন।ওহুদের ময়দানে নিজেকে রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর ঢাল স্বরুপ উপস্থাপন করে ছিলেন যার কারনে তাঁর দেহে ৭০ টী তীরের আঘাত লেগে ছিল।
Once a person came to the Holy Prophet (peace be upon him) and asked when would be the Day of Judgment. The Holy Prophet (peace be upon him) replied to him, “What have you prepared for it?” He said, “Ya Rasool Allah (peace be upon him), I have not done much extra prayers and nor have given much charity. But yes,for sure, I love Allah Almighty and His Messenger, peace be upon him.” Then, the Holy Prophet (peace be upon him) repliedthat “You will be with whom you love on the day of Judgment.”
সকল ছাড়াও সাহাবা কেরামের নবী পাকের প্রতি প্রেমের বহু দৃষ্টান্তের নজ়ীর রায়েছে যা হাদিস শরীফ ও অন্যান্য পুস্তকে লিপিবদ্ধ আছে।প্রকৃত পক্ষে সাহাবা রাদিয়াল্লাহু আনহুম সকল হযুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ও পরবর্তী উম্মতের মাঝে সেতুবন্ধ রচনাকারী কোরান ও সুন্নতের নির্দেশ পালনে সকলেই ছিলেন উম্মুখ।তাদের জীবনের প্রতিটি ঘটনা,কাজ ও বাণি আমাদের ব্যাক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্টীয় জীবন পযর্ন্ত অনুকরনীয়। মহান রব্বুল আলামিন আমাদের কে হযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায় হে ওয়া সাল্লাম এর সকল সাহাবার ফায়েজ লাভের তওফীক দান করুন।


 

 

 

মাযহাব অনুসরণ ওয়াজিব
 মাযহাব মানা বা তাকলীদ যে ওয়াজিব, তা কুরআনের আয়াত, সহীহ হাদীছ, উম্মতের কর্মপন্থা ও তাফসীরকারকদের উক্তি সমূহ থেকে প্রমাণিতসাধারণ তাকলীদ হোক বা মুজতাহিদের তাকলীদ হোক উভয়ের প্রমাণ মওজুদ রয়েছে। (নিম্নে ওগুলো উপস্থাপন করা হল।)
(১) اِهْدِ نَاالصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ-صِرَاطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ(সুরা ফাতেহা আয়াত  ৫-৬)
অর্থাৎ আমাদেরকে সোজা পথে পরিচালিত করওনাদের পথে যাঁদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ
এখানে সোজা পথ বলতে ওই পথকে বোঝানো হয়েছে, যে পথে আল্লাহর নেক বান্দাগণ চলেছেনসমস্ত তাফসীর কারক, মুহাদ্দিছ, ফিকহবিদ ওলীউল্লাহ গাউছ কুতুব ও আবদাল হচ্ছেন আল্লাহর নেক বান্দাতারা সকলেই  মুকাল্লিদ বা অনুসারী ছিলেনসুতরাং তাকলীদই হলো সোজা পথ
(২) اَطِيْعُوا للهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَاُولِى الْاَمْرِ مِنْكُمْ(সুরা নেসা আয়াত ৫৯)
(আল্লাহর আনুগত্য কর, তাঁর রসুলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যে যারা আদেশ প্রদানকারী রয়েছে, তাদেরও।) এ আয়াতে তিনটি সত্বার আনুগত্যের নির্দেশ  দেয়া হয়েছে-
(
১) আল্লাহর (কুরআনের) আনুগত্য, (২) রসুলের (হাদীছের) আনুগত্য এবং (৩) আদেশ দাতাগণের (ফিকহাবিদ মুজতাহিদ আলিমগণ) আনুগত্য اُوْلِى الْاَمْرِ (উলিল আমর) হলেন মুজতাহিদ আলিমগণইমনে রাখতে হবে যে, এ আয়াতে আনুগত্য বলতে শরীয়তের আনুগত্য বোঝানো হয়েছে
এ আয়াতে এ বিষয়ের প্রতিও পরোক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে যে অনুশাসন তিন রকমের আছে, কতগুলো সরাসরি কুরআন থেকে সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিতযেমন অন্তঃসত্ত্বা নয়, এমন মহিলার স্বামী মারা গেলে, তাকে  ইদ্দতপালন করতে হয়, এদের প্রতি  আল্লার নির্দেশ اَطِيْعُوْا اللهَ (আতীউল্লাহ) থেকে এ অনুশাসন গৃহীত হয়েছেআর কতগুলো অনুশাসন সরাসরি হাদীছ থেকে স্পষ্টরূপে প্রমাণিত উদাহরণ স্বরূপ, সোনা-রূপা নির্মিত অলংকার ব্যবহার পুরুষের জন্য হারাম ধরনের অনুশাসন মেনে চলার জন্য اَطِيْعُوْا الرَّسُوْلُ (আতীউর রসুল) বলা হয়েছেআর কতকগুলো অনুশাসন আছে যেগুলো স্পষ্টভাবে কুরআন বা হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয় নাযেমন স্ত্রীর সঙ্গে পায়ুকামে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারটি অকাট্যভাবে হারাম হওয়ার বিধানএ ধরনের অনুশাসন মেনে চলার জন্য اُوْلِى الْاَمْرِ مِنْكُمْ (উলীল আমরে মিনকুম) বলা হয়েছেএ তিন রকম শরীয়ত বিধির জন্য তিনটি আদেশ দেয়া হয়েছে
()  فَاسلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ   (সুরা আম্বিয়া  আয়াত ৭)
(হে লোক সকল! তোমাদের যদি জ্ঞান না থাকে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর।)
এ আয়াত থেকে বোঝা গেল যে, যে বিষয়ে অবহিত নয়, সে যেন সে বিষয়ে জ্ঞানীদের নিকট থেকে জেনে নেয়যে সব গবেষণালব্ধ মাসাইল বের করার ক্ষমতা আমাদের নেই, ঐগুলো মুজতাহিদগনের নিকট থেকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিতে হবেসুতরাং যে বিষয়ে আমরা জানি না, সেটা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা একান্ত প্রয়োজন
() وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَىَّ (সুরা লোকমান আয়াত ১৫)
(যিনি আমার দিকে (আল্লাহর দিকে) রুজু করেছেন তার পদাঙ্ক অনুসরন কর।)
এ আয়াত থেকে এও জানা গেল যে আল্লাহর দিকে ধাবিত ব্যক্তিবর্গের অনুসরণ (তাকলীদ) করা আবশ্যক
() وَالَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ اَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ اَعْيُنٍ وجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا
এবং তাঁরা আরয করেন- হে আমাদের রব! আমাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের দ্বারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দাও এবং আমাদেরকে পরহেযগারদের ইমাম বানিয়ে দাও
তাফসীরে মাআলিমুত তানযীলেএ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে
فَنَقْتَدِىْ بِالْمُتَّقِيْنَ وَيَقْتَدِى بِنَا الْمُتَّقُوْنَ
অর্থাৎ যাতে আমরা পারহেযগারদের অনুসরণ করতে পারি, আর পারহেযগারগণও আমাদের অনুসরণ করার সুযোগ লাভ করতে পারেন
এ আয়াত থেকেও বোঝা গেল যে, আল্লাহ ওয়ালাদের অনুসরণ বা তাকলীদ করা একান্ত আবশ্যক
 () يَوْمَ نَدْعُوْا كُلُّ اُنَاسٍ بِاِمَامِهِمْ
(যে দিন আমি প্রত্যেক দলকে নিজ নিজ ইমাম সহকারে ডাকবো….
তাফসীরে রূহুল বয়ানেএর ব্যাখ্যায় লিখা হয়েছে-
اَوْمُقَدَّمٍ فِى الدِّيْنِ فَيُقَالُ يَا حَنْفِىُّ يَاشَافِعِىُّ
(কিংবা ইমাম হচ্ছেন ধর্মীয় পথের দিশারী, তাই কিয়ামতের দিন লোকদিগকে হে হানাফীহে সাফেঈ! বলে আহবান করা হবে।)
এ থেকে বোঝা গেল, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার ইমামের সাথে ডাকা হবেডাকা হবে হে হানাফী মতাবলম্বীগণ! হে মালিকী মযহাবের অনুসারীগণ! চলো এখন প্রশ্ন হলো, যে ইমাম মানেনি, তাকে কার সাথে ডাকা হবে? এ সম্পর্কে সুফীয়ানে কিরাম (রহমতুল্লাহে আলাইহে) বলেন যে, যার ইমাম নেই, তার ইমাম হলো শয়তান
() وَاِذَاقِيْلَ لَهُمْ امنُوْا كَمَا اَمَنَ النَّاسُ قَالُوْا اَنُؤْمِنَ كَمَا اَمَنَ السُّفْهَاءُ
(এবং যখন তাদেরকে বলা হয়- তোমরা ঈমান আন, যেরূপ সত্যিকার বিশুদ্ধ চিত্ত মুমিনগণ ঈমান এনেছেনতখন তারা বলে- আমরা কি বোকা ও বেওকুফ লোকদের মত বিশ্বাস স্থাপন করব?
বোঝা গেল যে, ঐ ধরনের ঈমানই গ্রহনযোগ্য, যে ঈমান নেক বান্দাগণ পোষণ করেন অনুরূপ, মাযহাব ওটাই যেটার অনুসারী হচ্ছে নেক বান্দাগণ  উহাই হলো তাকলীদ -সুত্রঃ জাআল হক ১ম খন্ড-
                                                   ------
আজই সংগ্রহ করুন “ইলমে গায়েব প্রসংগ’ লেখক মুফতী নুরুল আরেফিন রেজবী

                                    

    

                                                  ৭

ইলমে হাদীসে ইমাম  আজম আবু হানীফা রাদিয়াল্লাহু আনহু  এর অবদান


সাইয়িদুল মুজতাহিদীন ইমামুল মুহাদ্দিসীন, ওয়াল ফুকাহা, হানাফী মাযহাবের প্রবর্তক, সিরাজুল উম্মাহ ও কোটি মানুষের স্মরণীয়-বরণীয় মহান ব্যক্তিত্ব ইমাম আজম আবু হানীফা
রাদিয়াল্লাহু আনহু  যেমনি ছিলেন সর্বসম্মত ফকীহ, তেমনি ছিলেন সর্বজন স্বীকৃত মুহাদ্দিস। কুরআন সুন্নার দিক-নির্দেশনায় তাঁর অসামান্য অবদানের কথা মুসলিম উম্মাহ স্মরণ করবে অনন্তকাল পর্যন্ত। তাঁর আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতা ও কুরআন-সুন্নার গবেষণায় সুনিপূন কৃতিত্ব আদর্শ হয়ে থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত। ইলমে হাদীসে তার অসামান্য অবদানের কথা অতি সংক্ষেপে আমরা এখানে আলোচনা করব।
খলীফা হযরত উমর
রাদিয়াল্লাহু আনহু  . ১৭ হিজরীতে কুফা নগরীর গোড়পত্তন করেন এবং তাঁর শাসন আমলেই কুফা মুসলিম সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। তখন কুফাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু  কে মুয়াল্লিম, মুফতী ও গভর্ণরের পরামর্শদাতা হিসেবে প্রেরণ করেন। তাঁর উপযুক্ত তালীম-তরবিয়তের বরকতে কুরআন, হাদীস ও ফিকহী মাসাইলের ব্যাপক চর্চা কুফার ঘরে ঘরে প্রসার লাভ করে। অতঃপর চতুর্থ খলীফা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু  . কুফা নগরীকে স্বীয় দারুল খেলাফত বানানোর কারণে ইসলামের চর্চা আরো ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করে এবং হযরত উমর, আলী ও ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু  এর উলূম ও ফতওয়া কুফা নগরীকে ইলমের খনিতে পরিণত করে। সাহাবাদের সাহচর্যে এসে অসংখ্য তাবেঈ শিক্ষা-দীক্ষা লাভ করেন। মুহাদ্দিস ও ফকীহদের আধিক্যের কারণে কুফা নগরী পৃথিবীর অদ্বিতীয় স্থানে পরিণত হয়।
তালীম তারবিয়তের স্বর্গভূমি এই কুফাতেই ইমাম আবু হানীফা
রাদিয়াল্লাহু আনহু  লালিত-পালিত হন। তাঁর পরিবারের সাথে সাহাবায়ে কেরামের বিশেষত: হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু  এর গভীর সম্পর্ক ছিল। একদা ইমাম আ’জমের পিতা সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু  হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু  .-এর সাক্ষাতে এলে তিনি তার সন্তান-সন্তুতির জন্য বিশেষভাবে দোয়া করেন। আর এ দোয়ার বরকতেই ইমাম আজম এত বড় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ইমাম আবূহানীফা রাদিয়াল্লাহু আনহু  এর পিতা ছিলেন একজন সৎ আমানতদার ব্যবসায়ী। তাই বাল্যকালেই তিনি পিতার থেকে এ ব্যবসা শিক্ষা করেছিলেন। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি যুগের বড় বড় মুহাদ্দিস ও ফক্বীহ এর দরসে উপস্থিত হতে থাকেন। একদা ইমাম শা’বী রাদিয়াল্লাহু আনহু  .-এর দরসে উপস্থিত হলে তিনি তাঁকে লক্ষ করে বলেছিলেন, “তোমার ভিতরে আমি অপূর্ব মেধা ও বেনযীর প্রতিভার নিদর্শন দেখতে পাচ্ছি।” ইমাম আবু হানীফা রাদিয়াল্লাহু আনহু  বলেন, তাঁর এ কথা আমার উপর প্রভাব বিস্তার করলো। তখন থেকে আমি হাঁটে-বাজারে গমন ছেড়ে দিয়ে ইলমের গবেষণায় আত্মনিয়োগ করলাম। এরপর থেকে তিনি ইলম অন্বষণে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেন। বিশেষ করে ইলমে হাদীস ও ইলমে ফিক্হে গভীর মনোনিবেশ করেন। তিনি যখন হাদীস চর্চায় ব্রতী হন তখন সারা দুনিয়ায় ইলমে হাদীসের ব্যাপক চর্চা চলছিল, যে কারণে তিনি তখনকার সকল বড় বড় হাদীস বিশারদ ও ফকীহদের থেকে উপকৃত হতে পেরেছিলেন। ইমাম আবু হানীফা রহ.-এর শাইখ ও উস্তাদের সংখ্যা চার হাজারের মতো। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ইমাম শা’বী, আ’মাশ, সিমাক ইবনে হারব, হাসান বসরী, শু’বা, কাতাদা, আতা ইবনে আবী রাবাহ, ইকরিমা ও হাম্মাদ ইবনে আবী সুলাইমান প্রমুখ। এতেই বুঝা যায় ইমাম আবু হানীফা রহ. ফকীহ হওয়ার সাথে সাথে কত উঁচু স্তরের একজন মুহাদ্দিস ছিলেন।
তাঁর ইলমে ধন্য হয়ে যারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকীহ হয়েছিলেন তাদের সংখ্যাও অগণিত। যেমন ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মাদ, যুফার, হাসান বিন যিয়াদ, আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক, অকী ইবনুল জাররাহ, মাক্কী ইবনে ইবরাহীম প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ তাঁর ইলমেরই ফসল। এরা সবাই সর্বজন স্বীকৃত মুহাদ্দিস ও ফকীহ এবং ইমাম আবু হানীফা রহ. এর ফেকাহ বোর্ডের সদস্য। ফিকহে হানাফীর ভিত্তি যেহেতু কুরআন-হাদীসের উপর তাই কুরআন হাদীসের উপর ব্যুৎপত্তি অর্জন ছাড়া মাসাইলের ইস্তেমবাত সম্ভব নয়। এ কারণেই ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাঈন, ইবনে সাইদ আল কাত্তান, ইবনুল মুবারক ও অকী ইবনুল জাররাহ-এর মতো মহান ব্যক্তিবর্গও হানাফী মাযহাব অনুযায়ী ফতোয়া দিতেন। ইমাম আবু হানীফা
রাদিয়াল্লাহু আনহু  এর হাদীসের ক্ষেত্রে যদি সামান্য দুর্বলতাও থাকত তাহলে এ সব মনীষী তার ফেকহী মাযহাব কোনদিনও গ্রহণ করতেন না।
ইমাম আবু হানীফা রহ. তিনিই সর্বপ্রথম ফিকহের তারতীবে ইলমে হাদীস সংকলন করেন এবং অমূল্য গ্রন্থ ‘কিতাবুল আছার’ লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর ইমাম মালেক রহ. তাঁর অনুসরণে মুয়াত্তা কিতাব প্রণয়ন করেন। এ বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা
রাদিয়াল্লাহু আনহু  .-এর পূর্বে আর কেউ এগিয়ে আসেন। এতে তিনি চল্লিশ হাজার হাদীস থেকে বাছাই করে হাদীস লিপিবদ্ধ করেন। ইমাম আবু হানীফা রাদিয়াল্লাহু আনহু  বর্ণিত হাদীসের সনদ হলো সর্বোচ্চ সনদ। কেননা তিনি ছিলেন তাবেঈ। তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাঝে মাত্র দুইজন বা তিনজন বর্ণনাকারী থাকতেন। এতে তাঁর বর্ণিত হাদীস সবচেয়ে সহীহ বলে বিবেচিত হত। অতএব কেউ যদি বলে ইমাম আবু হানীফা হাদীস জানতেন না বা তিনি হাদীসে এতিম ছিলেন, তাহলে তার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট হবে। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের অগ্রহণযোগ্য কথা তারাই বলতে পারেন, যারা তাঁর ফিকহের গভীরে যেতে পারেননি, বা তার স্বীকৃত ফিকাহ ইনসাফের সাথে অধ্যয়ন করেননি। কেননা বহু বিশ্ববরেণ্য উলামায়ে কেরাম ইমাম আবু হানীফা রহ.-এর অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন।
নিম্নে তাঁর সম্পর্কে তাঁর সমকালীন ও পরবর্তীকালীন কতিপয় মনীষীর মতামত উল্লেখ করা হলো।
হাফেয যাহাবী রহ. লিখেন- আবু হানীফা রহ. প্রসিদ্ধ ইমাম, মুসলিম মিল্লাতের শ্রেষ্ঠ ফকীহ, হাদীস অনুসন্ধানে তার রয়েছে অনন্য ভূমিকা
ইমাম শাবী রহ. বলেন, আল্লাহর কসম করে বলছি আবু হানীফা রহ. এর অনুধাবন শক্তি অতি আকর্ষণীয় এবং স্মৃতিশক্তি অতি প্রখর ছিলইমাম ইবনে আইয়ুব রহ. বলেন, ইলমে শরীয়ত আল্লাহর পক্ষ থেকে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দান করা হয়েছেতাঁর ইলম স্বীয় সাহাবাদের নিকটে পৌঁছেছেতারপর তাদের ইলম ইমাম আবু হানীফা তার অনুসারীদের কাছে পৌঁছেছেচাই এতে কেউ সন্তুষ্ট হোক বা অসন্তুষ্ট হোক
ইমাম আবু হানীফা রাদিয়াল্লাহু আনহু  সূত্রে বর্ণিত হাদীসের নির্ভরযোগ্য ১৫টি মুসনাদ রয়েছেএগুলোকে ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে মাহমূদ আল খাওয়ারিযমী রহ. একত্রে সংকলন করেজামিউল মাসানীদনামে একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থ প্রণয়ন করেনএতে ইমাম সাহেব সূত্রে বর্ণিত দু হাজার হাদীস রয়েছেমোটকথা ইমাম আযম আবু হানীফা রহ. ছিলেন তৎকালীন সময়ের অন্যতম মুহাদ্দিস হাফেযে হাদীসবাকি তিন মুজতাহিদ ইমাম ছিলেন তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ শাগরেদতিনি নিজে ইলমে হাদীসের প্রতি যেমন যত্নবান ছিলেন তেমনি তাঁর ছাত্রদেরকেও ইলমে হাদীসে উৎসাহ প্রদান করতেনতাঁর সমালোচনা করে মর্যাদা ক্ষুণ করা যায়নি বরং আল্লাহ তায়ালা তাঁর সম্মান দ্বিগুণ করে দিয়েছেন
সূত্র : তারিখে বাগদাদ : ১৩/৩৪৫, ৩৩৬, আলামুল মুসলিমীন : /২৯১, মাকানাতুল ইমাম আবু হানীফা : ১৯২

                                                    ৮

আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন সম্পর্কে শরীয়তের বিধান

আযান দেয়ার সময় মুয়ায্যিন যখন আশহাদুআন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ’  اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ  উচ্চারণ করে, তখন নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় বা শাহাদতের আঙ্গুল চুম্বন করে চুক্ষদ্বয়ে লাগানো মুস্তাহাব এবং এতে দীন-দুনিয়া উভয় জাহানের কল্যাণ নিহিত রয়েছে প্রসঙ্গে অনেক হাদীছ বর্ণিত আছেসাহাবায়ে কিরাম থেকে এটা প্রমাণিত আছে এবং অধিকাংশ মুসলমান একে মুস্তাহাব মনে করে পালন করেন
১।প্রসিদ্ধ সালাতে মস্উদীকিতাবের ১২ খন্ড نماز শীর্ষক ২০ নং অধ্যায়ে উল্লেখিত আছে- روي عن النبي صلى الله عليه وسلم انه قال من سمع اسمي في الاذان ووضع ابھاميه على عينيه فانا طالبه في صفوف القيمه و قائده الى الجنه
''The Noble Messenger is reported to have said, "On the Day of Qiyaamat, I shall search for the person who used to place his thumbs on his eyes when hearing my name during the Adhaan. I shall lead him into Jannat." [Salat al-Mas'oodi, Vol 2, Chapter 20]
(হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত আছে- যে ব্যক্তি আযানে আমার নাম শুনে স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখের উপর রাখে, আমি ওকে কিয়ামতের কাতার সমূহে খোঁজ করবো এবং নিজের পিছে পিছে বেহেশতে নিয়ে যাব )
২।তাফসীরে রূহুল বয়ানে ষষ্ঠ পারার সূরা মায়েদার আয়াত وَاِذَا نَادَيْتُمْ اِلَى الصَّلوةِ الاية এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উল্লেখিত আছে-
وضعف تقبيل ظفرى ابهاميه مع مسبحتيه والمسح على عينيه عند قوله محمد رسول الله لانه لم يثبت فى الحديث المرفوع لكن المحدثين اتفقوا على ان الحديث الضعيف يجوز العمل به فى الترغيب والترهيب
"Kissing the nails of the thumbs and the shahadat finger when saying "Muhanunadur-Rasoolullah SallAllaho Alaihi wa Sallam has been classified as weak (zaeef) because it is not proven from a marfoo' Hadith. However, Muhadditheen have agreed that to act upon a zaeef Hadith to incline people towards deeds and instill fear within them is permitted." [Tafseer Rooh al-Bayaan, Vol 3, Page 282]
মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহবলার সময় নিজের শাহাদাতের আঙ্গুল সহ বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখে চুমু দেয়ার বিধানটা জঈফ রেওয়াতের সম্মতকেননা এ বিধানটা মরফু হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়কিন্তু মুহাদ্দিছীন কিরাম এ ব্যাপারে একমত যে আকর্ষণ সৃষ্টি ও ভীতি সঞ্চারের বেলায় জঈফ হাদীছ অনুযায়ী আমল করা জায়েয(রুহুল বায়ান ৩ খন্ড ২৮২ পৃঃ)
 ৩। ফাত্ওয়ায়ে শামীর প্রথম খন্ড الاذان শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-
আযানের প্রথম শাহাদত বলার সময়- صَلَّى اللهُ عَلَيْكَ يَارَسُوْلَ اللهِ (সাল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ) বলা মুস্তাহাব এবং দ্বিতীয় শাহাদত বলার সময়- قُرةُ عَيْنِىْ بِكَ يَارَسُوْلَ اللهِ  (কুর্রাতু আইনী বেকা ইয়া রাসুলাল্লাহ) বলবেনঅতঃপর নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ স্বীয় চোখদ্বয়ের উপর রাখবেন এবং বলবেন- الَلهُمَّ مَتِّعْنِىْ بِالسَّمْعِ وَالْبَصَرِ (আল্লাহুম্মা মত্তায়েনী বিসসময়ে ওয়াল বসরে) এর ফলে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওকে নিজের পিছনে পিছনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন
    (রাদ্দুল মুহতার ৩য় খন্ড ২৩৩ পৃঃ,তফসীরে জালালাইন সুরা আহযাব  ১৩ নং টীকা ৩৫৭ পৃঃ,কনযুল ইবাদ্‌
কুহস্থানী,ফাত্ওয়ায়ে সূফিয়া)
 ৪। কিতাবুল ফিরদাউসে বর্ণিত আছে- যে ব্যক্তি আযানে আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহশুনে স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে, আমি ওকে আমার পিছনে বেহেশতে নিয়ে যাব এবং ওকে বেহেশতের কাতারে অন্তর্ভূক্ত করবোএর পরিপূর্ণ আলোচনা বাহারুর রায়েকএর টীকায় বর্ণিত আছে
উপরোক্ত ইবারতে ছয়টি কিতাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছেযেমন- শামী, কনযুল ইবাদ, ফাত্ওয়ায়ে সূফিয়া, কিতাবুল ফিরদাউস, কুহস্থানী এবং বাহারুর রায়েকএর টীকাওই সব কিতাবে একে মুস্তাহাব বলা হয়েছে
 ৫। مقاصد حسنه فى الاحاديث الدئره على السنة  নামক  গ্রন্থে ইমাম সাখাবী (রহমাতুল্লাহ আলায়) বর্ণনা করেছেন- ইমাম দায়লমী (রহমাতুল্লাহ আলায়) ফিরদাউসকিতাবে হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রহমাতুল্লাহ আলায়) থেকে বর্ণনা করেছেন যে মুয়াযযিনের কন্ঠ থেকে যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রসুলুল্লাহশোনা গেল, তখন তিনি (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তাই বললেন এবং স্বীয় শাহাদতের আঙ্গুলদ্বয়ের ভিতরের ভাগ চুমু দিলেন এবং চক্ষুদ্বয়ে লাগালেন  তাদেখে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ ফরমান যে ব্যক্তি আমার এই প্রিয়জনের মত করবে, তাঁর জন্য আমার সুপারিশ আবশ্যিক
                    (আল মাক্বাসিদুল হাসানাহ,হাদিস নং১০২১,পৃ নং৩৮৪)
উক্ত মাকাসেদে হাসনা গ্রন্থে আবুল আব্বাসের (রহমাতুল্লাহ আলায়) রচিত মুজেযাত গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে-
হযরত খিযির (আলায়হে ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত আছে- যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের কণ্ঠে আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহশোনে যদি বলে- مَرْحَيًابِحَبِيْبِىْ وَقُرَّةِ عَيْنِىْ مُحَمَّدِ ابْنِ عَبْدِ اللهِ (মারাহাবা বে হাবীবী ওয়া কুররাতে আইনী মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ) অতঃপর স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে লাগাবে, তাহলে ওর চোখ কখনও পীড়িত হবে না।) উক্ত গ্রন্থে আরোও বর্ণনা করা হয়েছে- হযরত মুহাম্মদ ইবনে বাবা নিজের একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে এক সময় জোরে বাতাস প্রবাহিত হয়েছিলতখন তাঁর চোখে একটি পাথরের কনা পড়েছিল যা বের করতে পারেনি এবং খুবই ব্যথা অনুভব হচ্ছিল 
যখন তিনি মুয়াযযিনের কণ্ঠে আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রসুলুল্লাহ শুনলেন, তখন তিনি উপরোক্ত দুআটি পাঠ করলেন এবং অনায়াসে চোখ থেকে পাথর বের হয়ে গেলএকই মকাসেদে হাসনাগ্রন্থে হযরত শামস মুহাম্মদ ইবনে সালেহ মদনী থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি ইমাম আমজদ (মিসরের অধিবাসী পূর্ববর্তী উলামায়ে কিরামের অন্তর্ভূক্ত) কে বলতে শুনেছেন- যে ব্যক্তি আযানে হুযূর (সাল্লাল্লহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর নাম মুবারক শোনে স্বীয় শাহাদাত ও বৃদ্ধাঙ্গুলী একত্রিত করে- وَقَبَّلَهُمَا وَمَسَحَ بِهِمَا عَيْنَيْهِ لَمْ يَرْ مُدْ اَبَدًا উভয় আঙ্গুলকে চুম্বন করে চোখে লাগাবে, কখনও তার চক্ষু পীড়িত হবে নাইরাক- আযমের কতেক মাশায়েখ বলেছেন যে, যিনি এ আমল করবেন, তাঁর চোখ রোগাক্রান্ত হবে না
وَقَالَ لِىْ كُلّ مِنْهُمَا مُنذُ فَعَلْتُهُ لَمْ تَرْمُدْ عَيْنِىْ
কিতাব রচয়িতা বলেছেন- যখন থেকে আমি এ আমল করেছি আমার চক্ষু পীড়িত হয়নি
কিছু অগ্রসর হয়ে উক্তমকাসেদে হাসনাগ্রন্থে আরও বর্ণিত হয়েছে-
وَقَالَ ابْنِ صَالِحٍ وَاَنَا مُنْذُ سَمِعْتُهُ اِسْتَعْمَلْتَهُ فَلَا تَرْمُدْ عَيْنِىْ وَاَرْجُوْا اَنَّ عَافِيَتَهُمَا تَدُوْمُ وَاِنِّىْ اَسْلَمُ مِنَ الْعَمى اِنْشَاءَ اللهُ
হযরত ইবনে সালেহ বলেছেন- যখন আমি এ ব্যাপারে জানলাম, তখন এর উপর আমল করলামএরপর থেকে আমার চোখে পীড়িত হয়নিআমি আশা করি, ইনশাআল্লাহ এ আরাম সব সময় থাকবে এবং অন্ধত্ব মুক্ত থাকবোউক্ত কিতাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ইমাম হাসন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহশোনে যদি বলে  এবং
مَرْحَبًا بِحَبِيْبِىْ وَقُرَّةُ عَيْنِىْ مُحَمَّدِ ابْنِ عَبْدِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে লাগাবে এবং বলবে-  لَمْ يَعْمَ وَلَمْ يَرْمَدْ তাহলে কখনও সে অন্ধ হবে না এবং কখনও তার চক্ষু পীড়িত হবে না(আল মাক্বাসিদুল হাসানাহ,হাদিস নং১০২১,পৃঃ নং৩৮৫)
শরহে নেকায়ায় বর্ণিত আছে-জানা দরকার যে মুস্তাহাব হচ্ছে যিনি দ্বিতীয় শাহাদতের প্রথম শব্দ শোনে বলবেনصَلَّى اللهُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ (সাল্লাল্লাহু আলাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ) এবং দ্বিতীয় শব্দ শোনে বলবেন- اللهِ قُرَّةُ عَيْنِىْ    بِكَ يَارَسُوْلَ (কুররাতু আইনি বে কা ইয়া রাসুলাল্লাহ) এবং নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুক্ষদ্বয়ে রাখবেন, ওকে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের পিছনে পিছনে বেহেশতে নিয়ে যাবেনঅনুরূপ কনযুল ইবাদেও বর্ণিত আছে[যামীউর রুমুয,১ম খন্ড,পৃঃ১২৫ Fasl al Adhan, Maktaba Islamiya (Iran), Vol 1]
 মাওলানা জামাল ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উমর মক্কী  স্বীয় ফাত্ওয়ার কিতাবে উল্লেখ করেছেন-
تَقْبِيْلُ الْاِبهَامَيْنِ وَوَضْعُ هُمَا عَلَى الْعَيْنَيْنِ عِنْدَ ذِكْرِ اسْمِه عَلَيهِ السَّلَامُ فِى الْاَذَانِ جَائِر بَلْ مُسْتَحَب صَرَّحَ بِه مَشَائِخِنَا
আযানে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দেয়া এবং চোখে লাগানো জায়েয বরং মুস্তাহাবআমাদের মাশায়েখে কিরাম এ ব্যাপারে বিশদ বর্ণনা করেছেন
আল্লামা মুহাম্মদ তাহির (রাদিয়াল্লাহু আনহু) تكملة مجمع بخار الانوار  গ্রন্থে উপরোক্ত হাদীছকে বিশুদ্ধ নয়মন্তব্য করে বলেন-
وَرُوِىَ تَجرِبَة ذَالِكَ عَنْ كَثِيْرِيْنَ
"There are many reports of this benefit being experienced." “(কিন্তু এ হাদীছ অনুযায়ী আমলের বর্ণনা অনেক পাওয়া যায়।)(খাতিমা মাযমা বেহারুল আনোয়ার ৩য় খন্ড ৫১১ পৃঃ)
আরও অনেক ইবারত উদ্ধৃত করা যায়কিন্তু সংক্ষেপ করার উদ্দেশ্যে এটুকুই যথেষ্ট মনে করলাম
হযরত সদরুল আফাযেল আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ নঈম উদ্দীন সাহেব কিবলা মুরাদাবাদী বলেছেন, লন্ডন থেকে প্রকাশিত ইনজিলগ্রন্থের একটি অনেক পুরানো কপি পাওয়া গেছে, যেটার নামইনজিল বারনাবাসইদানীং এটা ব্যাপকভাবে প্রকাশিত এবং প্রত্যেক ভাষায় অনূদিত হয়েছেএর  অধিকাংশ বিধানাবলীর সাথে ইসলামের বিধানাবলীর মিল রয়েছে এ গ্রন্থের এক জায়গায় লিখা হয়েছে যে হযরত আদম (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রূহুল কুদ্দুস (নুরে মুস্তাফা) কে দেখার জন্য আরজু করলেন, তখন সেই নুর তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলের নখে চমকানো হলোতিনি মহব্বতের জোশে উক্ত নখদ্বয়ে চুমু দিলেন এবং চোখে বুলালেন
হানাফী আলিমগণ ছাড়াও শাফেঈ ও মালেকী মাযহাবের আলিমগণও বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন মুস্তাহাব হওয়া সম্পর্কে একমতযেমন শাফেঈ মযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব اعانة الطالبين على حل الفاظ فتح الممعين  এর ২৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আছে-
ثُمَّ يُقَبِّلَ اِبْهَا مَيْهِ وَيَجْعَلُ هُمَا عَلى عَلْنَيْهِ لَمْ يَعْمِ وَلَمْ يَرْمُدْ اَبَدًا
“(অতঃপর নিজের বৃন্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দিয়ে চোখে লাগালে, কখনও অন্ধ হবে না এবং কখনও চক্ষু পীড়া হবে না।)                 
মালেকী মযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব-
كفاية الطالب الربانى لرسالة ابن ابى زيد القيردانى
এর প্রথম খন্ডের ১৬৯ পৃষ্ঠায় এ প্রসঙ্গে অনেক কিছু বলার পর লিখেছেন-
ثُمَّ يُقَبِّلُ اِبْهَامَيْهِ وَيَجْعَلُ هُمَا عَلى عَيْنَيْهِ لَمْ يَعمِ وَلَمْ يَرْمُدْ اَبَدًا
“(অতঃপর বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দেবে এবং চোখে লাগাবে, তাহলে কখনও অন্ধ হবে না এবং কখনও চক্ষু পীড়া হবে নাএর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আল্লামা শেখ আলী সাঈদী عدوى  নামক কিতাবের ১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন-
গ্রন্থকার বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বনের সময়ের কথা উল্লেখ করেনিঅবশ্য শেখ আল্লামা মুফাসসির নুরুদ্দীন খুরাসানী থেকে বর্ণিত আছে, তিনি কতেক লোককে আযানের সময় লক্ষ্য করেছেন যে যখন তারা মুয়ায্যিনের মুখে আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসুলুল্লাহ শুনলেন, তখন নিজেদের বৃদ্ধাঙ্গুলে চুমু দিলেন এবং নখদ্বয়কে চোখের পলকে এবং চোখের কোণায় লাগালেন এবং কান পর্যন্ত বুলিয়ে নিলেনপ্রত্যেক শাহাদাতের সময় এ রকম একবার একবার করলেনআমি ওদের একজনকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলামতখন তিনি বললেন আমি বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুমু দিতাম কিন্তু মাঝখানে ছেড়ে  দিয়েছিলামতখন আমার চক্ষু রোগ হয়এর মধ্যে এক রাতে আমি হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) কে স্বপ্নে দেখলামতিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন- আযানের সময় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখে লাগানো কেন ছেড়ে দিয়েছ? যদি তুমি চাও, তোমার চোখ পুনরায় ভাল হোক, তাহলে তুমি পুনরায় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখে লাগানো আরম্ভ করঘুম ভাঙ্গার পর আমি পুনরায় এ আমল শুরু করে দিলাম এবং আরোগ্য লাভ করলামআজ পর্যন্ত সেই রোগে আর আক্রান্ত হইনিউপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতিভাত হলো যে, আযান ইত্যাদিতে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন ও চোখে লাগানো মুস্তাহাব, হযরত আদম (আলাইহি সাল্লাম) সিদ্দিকে আকবর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ও ইমাম হাসন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর সুন্নাতফকীহ, মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ এটা মুস্তাহাব হওয়া সস্পর্কে একমত শাফীঈ ও মালেকী মযহাবের ইমামগণ এটা মুস্তাহাব হওয়া সস্পর্কে রায় দিয়েছেন প্রত্যেক যুগে এবং প্রত্যেক মুসলমান একে মুস্তাহাব মনে করেছেন এবং করছেন এ আমল নিম্নবর্ণিত ফায়দা গুলো রয়েছেঃ
আমলকারীর চোখ রোগ থেকে মুক্ত থাকবে এবং ইনশাআল্লাহ কখনও অন্ধ হবে না, যে কোন চক্ষু রোগীর জন্য বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বনের আমলটি হচ্ছে উৎকৃষ্ট চিকিৎসা এটা অনেকবার পরীক্ষিত হয়েছেএর আমলকারী হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর শাফায়াত লাভ করবে এবং ওকে  কিয়ামতের কাতার থেকে খুঁজে বের করে তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) পিছনে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন
একে হারাম বলা মূর্খতার পরিচায়কযতক্ষণ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার সুস্পষ্ট  দলীল পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ একে নিষেধ করা যাবে নামুস্তাহাব  প্রমাণের জন্য মুসলমানগণ মুস্তাহাব মনে করাটা যথেষ্টকিন্তু হারাম বা মকরূহ প্রমাণের জন্য নির্দিষ্ট দলীলের প্রয়োজন
সূত্রঃ-ফাতওয়া রেযবীয়া ২য় খন্ড ৫৩১ পৃঃ(نھج السلامۃ فی حکم تقبیل الابھامین فی الاقامۃ),জা-আল হক্ব,শানে হাবিবুর রহ মান
       
 
(আসামে এক ওহাবীর “ উরুস কোরান হাদিসের পরিপন্থী কাজমন্ত্যবের পরিপেক্ষিতে লিখিত প্রবন্ধ)
                                                                    ৯
بسم الله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه أجمعين
উরস পালন কোরান হাদিস সম্মত

    ফখরুল হাসান সাহেবর লিখিতউরুস কোরান হাদিসের পরিপন্থী কাজ”  প্রবন্ধ পড়ে খুবই আশ্চ্যর্য হলাম যা তৈয়বুর রাহমান সাহেব তার বক্তৃতার মধ্যে ব্যক্ত করেছেন।এই বক্তৃতার দ্বারা স্পস্ট যে তিনি নিজেকে আমীরে শরীয়ত দাবী করিলেও হাদীস শাস্ত্র সম্পকে বেশি জ্ঞান রাখেন না।শুধু মাত্র দু এক স্থানের নিদর্শন কে যে ইসলামের দলীল হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না তা সম্পর্কে সকলেই জ্ঞাত।
               আমি আল-আযহার বিশ্ব বিদ্যলয়ে পাঠ্যারত অবস্থায় যখন ভারতের ইসলামিক সভ্যতার দিকে দৃস্টিপাত করতাম তখন উপলব্ধি করতাম যে ভারত উপমহাদেশে ইসলামিক সভ্যতার অবনতীর এক কারন হ্ এই দেশের কিছু স্বল্প জ্ঞানী ওলামা সম্প্রদায় যারা সাধারণদের মধ্যে নিজেদের প্রভাব বৃদ্বির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ফাতওয়া জারী করে থাকেন।
তৈয়বুর রাহমান সাহেব উরস বিষয়ে যে মন্তব্য করে নিজ নির্বুদ্ধিতার যে পরিচয় দিয়েছেন তা স্পষ্ট উরস পালন করা কোরান হাদিসের আলো্কে বৈধ কিনা তা আলোচনার পূবেউরসশব্দের অর্থ  প্রসঙ্গে আলোকপাত করা প্রয়োজন।
 **উরস শব্দের ব্যবহৃত অর্থ**
উরস শব্দটি বাস্তব যে অথে ব্যবহৃত হয় তা হল, প্রতি বছর কোন ওলী বা কোন নেক বান্দার ওফাত দিবস কে কেন্দ্র করে তার কবর যিয়ারত ,কোরান পাঠ তার উদ্দেশ্যে সাদকা ইত্যাদির মাধ্যমে ছাওয়াব পৌছানোকে উরস বলা হয়।Urs merely means to visit the grave on the date of demise every year,convey the reward of the receitation of the Holy Quran and give charity.
উরসের উৎস হাদিস পাক এবং অন্যান্য কেতাব হতে প্রমানিত।
 **হাদিসের আলো্কে উরস তথা কবর যিয়ারত,কোরান পাঠ তার উদ্দেশ্যে সাদকার বৈধতা**
, সহীহ ইবন হাব্বান,মুস নাদে আহমদ নামক সহীহ হাদিস কেতাবে এসেছে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহ আলায় হে ওয়া সাল্লাম ইরছাদ  করেছেন যে  
إني كنت نهيتكم عن زيارة القبور ألا فزوروها فإنها تذكركم بالموت অথাৎআমি তোমাদের পূর্বে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম কিন্তু এখন থেকে নিশ্চয় করবে যা তো্মাদের মধ্যে মৃত্যুর ভয় জাগাবে।উক্ত হাদিস সম্পর্কে আরব,মিসর তথা বিশ্বের বড় বড় মুহাদ্দিসদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই এবং সকলেই এই হাদিস দ্বারা যিয়ারত করাকে মুস্তাহাব সুন্নাত বলে মেনে নিয়েছেন।নির্ধারিত হোক অথবা অনির্ধারিত হোক প্রত্যেক প্রকারের যিয়ারত যায়েজ।
উরস এর দিনে মৃতদের উদ্দেস্যে কো্রান খানি করা হয়ে থাকে যা সহীহ ইবনে হাব্বান উল্লেখিত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত হুযুর ইরছাদ করেন
روى ابن حبان وصحح أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: "إقرأوا يس على موتاكم
অথাৎ তো রা তো্মাদের মুদাদের উদ্দেস্যে সুরা ইয়াসিন পাঠ র।
, বায়হাক্বী শরীফ এর মধ্যে আছে সাহাবী হযরত আব্দুল্লা বিন ওমর হতে বর্ণিত
كان يستحب قراءة أواخر البقرة على القبور   
অর্থাৎ হযরত আব্দুল্লা বিন ওমর সূ্রা বাকারার শেষাংস কে মুর্দাদের উদ্দেশ্যে পাঠ করাকে মুস্তাহাব বলেছেন।
উরস বা মৃতদের কবর যিয়ারত ,তাদের উদ্দেস্যে কোরান পাঠ করা বৈ্ধতা উপ রিক্ত সহিহ কেতাব ছাড়াও যে সকল হাদিস এর মধ্যে এসেছে তা হল মিশকাত রিফ এরزيارة قبور অধ্যয়ে।
فزوروها শব্দটি বহূ কেতাবে এসেছে যেমন নেসাই শরীফ এর ৬৩৭ নং হাদিসে,মুসলিম রীফ,আবু দাউদ তিরমী্যী মধ্যে ব্যবহৃত য়েছে।
  অতএব  যারা নে রেন যে উরুস কোরান হাদিসের পরিপন্থী কাজ তাদের অনুরোধ করব তারা যেন এই সকল হাদিস গ্রন্থ গুলি পাঠ করেন, এর ফলে এক দিকে যেমন নিজেরা নিজ ভূল বুঝতে পারবেন অপর দিকে মুসলিম সমাজ সঠীক থের সন্ধান পাবে।
     তৈয়বুর রাহমান সাহেব তার বক্তৃতার মধ্যে আরও বলেছেন যে ভারত  এশিয়ার দু একটি দেশ ছাড়া অন্য কোথাও প্রথা চালু নেয়।এ মন্তব্য একদম ভিত্তিহীন,আমার মনে হয় তিনি জানেন কীনা যে বিশ্বে ৫৬ টী মূসলিম দেশ রয়েছে ,সেই সকল দেশের বড় বড় ওলামায়ে কেরাম উরস এর বৈধতা স্বীকার 
করেছেন, মিসর তথা আরব দুনিয়াই যিনি খ্যাতি সম্পন্ন মু্ফতি তিনি হলেন মু্ফতি আলি জুমআ ,তিনি তার ফতওয়ার কেতাব আল বায়ান এর মধ্যে লিখেছেন
قال علماء الإسلام زيارة القبور سنة مستحبة، وأمر مطلوب تذكرنا بالموت والأخرة. “কবর যিয়ারত  উরস করা সম্পকে সকল ওলামার রায় হল এটা মুস্তাহাব” (আল বায়ান ১৯৩ পৃঃ)
তিনি লিখেছেন মৃতদের উদ্দেশ্যে কো্রান পাঠ করা ,সিরনী থাবার তৈ্রী করে গরীব মিস্কিন দের খাওয়ানো বণ্টনকরা শরীয়ত সম্মত।(আল বায়ান ২৭৩ পৃঃ)
  যিয়ারত প্রসঙ্গে ইমাম তাবরানী তাঁরকাবীরগ্রন্থে,দারুল কু্তনি সু্নানের মধ্যে এবং বায়হাক্বীকুবরা৫ম খন্ড ২৪৫ পৃঃ মধ্যে উল্ল্যেখ করেছেন হুযুর পাক ইরশাদ করেছেন                                                                        والرسول صلى الله عليه وسلم يقول: "من زار قبري وجبت له شفاعتي   অর্থাৎ যে আমার কবর যিয়ারত করল তার শাফায়াত আমার উপর ওয়াজিব হয়ে গেল।
,মুগণী ২য় খণ্ড ২২৫ পৃঃ,তোহফাতুল আহূযী ৩য় খণ্ড ২৭৫ পৃঃ মধ্যে হযরত আনাস রাদীয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিতযখন কেউ কবর স্থানে প্রবেশ করবে সে যেন সু্রা ইয়াসিন তেলায়াত করে ,এর ফলে গো্রস্থানবাসীর উপর রহমত বর্ষীত হয়। উরসের বৈ্ধতা সর্ম্পকে আর বহু উপযূক্ত দলীল রয়েছে,এর মধ্যে সামান্য কিছু বনর্না করা হল।
৫.ফতওয়া শামি ১ম খন্ড যিয়ারতে কবুর অধ্যয়ে আছে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম প্রতি বছর উহুদ যুদ্ধের শহীদ দের কবরে যিয়ারতের উদ্দেশ্যে রওনা হতেন।শাহ আব্দুল আযীয রহমাতুল্লাহ এই হাদিসটি আওলীয়া কেরামগ্ণের উরস পালনের ক্ষেত্রে উল্ল্যেখযোগ্য দলীল হিসাবে গণ্য করেছেন (ফাতওয়া রেজবীয়া ১১ খন্ড ৫১ পৃঃ)।
পরিশেষে,একথা বলতে চাই যে সামান্য কিছু সংখ্যক লোক বা এলাকার ক্রিয়াকলাপ দ্বারা শরীয়তের আইন প্রযোজ্য হয় না, শরীয়তের আইন প্রযোজ্য হয় একমাত্র কো্রান হাদিসের অমূল্য বাণী দ্বারা।

১০

 প্রচারণার ধুম্রজালে ইতিহাসের পাতা থেকে অদৃশ্য ভারত তথা এশিয়ার মহাপন্ডিত ইমাম আহমদ রেজা খান রাহমাতুল্লাহ আলায়

প্রচারণার ধুম্রজালে ইতিহাসের পাতা থেকে এমন কিছু মহামানবের কৃত্বিত্ব কে চেপে রাখা হয়েছে,যদি তাদের অমুল্য ক্রিয়াকলাপ বিশ্ব সভায় প্রকাশিত হত,তাহলে ভারত আজ বিশ্ব ইতিহাসের চরম শিখরে আরোহন করত।এমনই একজন মহান ব্যক্তি হলেন ইমাম আহমদ রেজা খান রহমাতুল্লাহ আলায়।তিনি এমনই এক মজলুম ব্যক্তি যাঁর সুমহান আত্মীক,নৈতিক ও চারিত্রিক গুনাবলীর প্রতি চরম উপেক্ষাই শুধু প্রদশর্ন করা হয়নি,ইতিহাসের পাতা থেকেও তাঁর অমুল্য পরিচয়কেও বিলুপ্ত করা হয়েছে।তাঁর পুত-পবিত্র চরিত্রে কলংক লেপনের ঘৃণ মতলবে এমন সব অপবাদ রটাতেও নরাধমরা বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি,যা সাধারন কোন ভদ্রলোকের ক্ষেত্রেও কল্পনা করা সম্ভব নয় ।মুখোশধারীদের প্রচারনার ধুম্রজালে এ মহান চরিত্র আমাদের দৃস্টিপথ থেকে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে সম্পুর্ণভাবে।অপরিসীম জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ,অনুকরণীয় ধৈয্য ও সহনশীলতা এবং সকল বিষয়ে দক্ষতা ও কর্ম নৈপুন্যের বিরল ইতিহাস যিনি সৃস্টি করেছিলেন তিনি হলেন ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বেরেলী শহরের মহাজ্ঞানী তথা ইসলাম সংস্কারক ইমাম আহমদ রেজা খান
আল্লামা আব্দুল হামিদ (vice chancellor of Al-jamia Al-nizamia,Hyderabad)আলা হযরত সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেন Moulana Ahmed Raza khan was a sword of islam and great commander for the cause of islam”.আরবের বিখ্যাত ইসলাম গবেষক ও মহাপন্ডিত ইব্রাহীম খলিল এবং শেখ মুসা আলী শামীর মন্তব্য হল “Ala Hazrat (Alaihir Rahma)as the Revivalist of the 14th century A.H,if he called Revivalist of this century .It will be right and true.”
     আলোচ্য প্রবন্ধে ইমাম রেজা রহমাতুল্লাহ আলায় এর সর্ব বিষয়ে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অনুপম দিকগুলি পাঠক বর্গের সামনে তুলে ধর।এটা তাঁর বিষ্ময়কর,কর্মবহুল ও আদর্শ জীবনের পুণাংগ চিত্র না হলেও এর মাধ্যমে তাঁর সর্ব বিষয়ে দক্ষতা ও মহানুভবতার এমন এক মনোরম ও মমর্ষ্পশী   সংক্ষিপ্ত চিত্র ,যা সাধারণ বিবেক বুদ্ধির অধিকারি প্রতিটি মানুষকে তাঁর প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধায় আভিভুত করে তুলবে বলে আশা করা যায় । অর্ধশতাব্দী ব্যাপী সময়ে তিনি বিভিন্ন প্রশিক্ষক ও নিজ প্রতিভার মাধ্যমে যে প্রায় ১১৬ প্রকার বিদ্যা ও জ্ঞানের শাখায় পান্ডিত্য অর্জন করেন তা বিশ্ব-ইতিহাসে বিরল।এই ১১৬ টি জ্ঞানের শাখায় প্রায় ১৫০০টি পুস্তক রচনা করেছেন।
ইমাম আহমদ রেজা খান রহমাতুল্লাহ আলায়হের অর্জিত বিদ্যার কয়েকটি হল-
১.ইলমে কুরআন(QUARANIC SCIENCE)
২.ইলমে জবর(ALGEBRA)
৩.ইলমে কিমিয়া(CHMISTRY)
৪.ইলমে আরদিয়াত(GEOLOGY)
৫.ইলমে মাহ লিয়াত(ECOLOGY)
৬.ইলমে ফালসাফা(PHILOSOPHY)
৭.ইলমে মান তিক(LOGIC)
৮.ইলমে ইক তেসাদ(POLITICAL ECONOMY)
৯.ইলমে নাবাতাত(BOTANY)
১০.ইলমে হান্দাসা(GEOMETRY)
১১.ইলমে তবিয়ত(PHYSICS)
১২.ইলমে নুজুম(ASTROLOGY)
১৩.ইলমে মাবাদা তবিয়ত(METAPHYSICS)
১৪.ইলমে সাত হ(TRIGONOMETRY)
১৫.ইলমে রিয়াদি(AIRTHEMETIC)
১৬.ইলমে হেসাব(MATHEMETIC)
১৭.ইলমে শোহরিয়াত(CIVICS)
১৯.ইলমে জিগ্রফিয়া(GEOGRAPHY)
২০.ইলমে শায়েরী(POETRY)
২১.ইলমে বাঙ্কারী(BANKING)
২২.ইলমে ওম্রানিয়াত(SOCIOLOGY)
২৩.ইলমে আখলাক(ETHICS)
২৪.ইলমে সুলুক(COMMUNICATION)
২৫.ইলমে কানুন(LAW)
২৬.ইলমে জায়েযা(HOROSCOPY)
২৭.ইলমে হাওয়ালিয়াত(ZOOLOGY)
২৮.ইলমে ফেলিয়াত(PHYCHOLOGY)
২৯.ইলমে আর দে তবীয়ত(GEOLOGY)
৩০.ইলমে নাফাসানিয়াত(PSYCHOLOGY)
৩১.ইলমে সিরাত নেগারী(BIO-GRAPHY )
৩২.ইলমে মাআনি(RHETORIC)
৩৩.ইলম বায়ান(METAPHOR)
৩৪.ইলমে মাবাহিস(DIALECTICS)
৩৫.ইলমে বালাগাত(FIGURE OF SPEECH)
৩৬.ইলমে ফিকাহ(LAW & JURISPRUDENCE)
৩৭.ইলমে তাফসির(EXPLANATION)
৩৮.ইলমে যায়যাত(ASTRONOMI)
৩৯.ইলমে মোনাযারা(POLEMIC)
৪০.ইলমে হাদিস(TRADITION)
৪১.ইলমে উসুলে ফিকাহ(JURISPRUDENCE)
৪২.ইলমে সিরাত নেগারি(BIOGRAPHY OF PROPHET)
৪৩.ইলমে কেয়াফা(PHYSIGNOMY)
৪৪.ইলমে তাসাউফ(MYSTAGOLOGY)
৪৫.ইলমে সামারিয়াত(STATISTICS)
৪৬.ইলমে সাওতিয়াত(PHONOETIC)
৪৭.ইলমে মালিয়াত(FINANCES)
৪৮.ইলমে তাবাকি(GREEK-AIRTHMETIC)
৪৯.ইলমে তোওকীত(RECKONING)
৫০.ইলমে ক্বেরাত(RECITATION)
৫১.ইলমে কালাম(SCHOLASTIC)
৫২.ইলমে জারহও তাদিল(CRITICAL EXM)
৫৩.ইলমে আক্বায়েদ(ARTICLE OF FAITH)
৫৪.ইলমে আয়াম(HISTORY)
৫৫.ইলমে খলক্বিয়াত(CYTOLOGY)
ইমাম আহমদ রেজা খান রহমাতুল্লাহ আলায়হের এতদ্বিষয়ে জ্ঞান সম্পর্কে পর্যালোচনা করে প্রফেসর ডঃ মোহাম্মদ হাসান (শায়খুল আদাব,ইস্লামিয়া ইউনিভার্সিটি)ম ন্তব্য ক রেন Moulana was prolific writer.He wrote a large number of treaties.It is due to the fact that his head and heart had surging waves of knowledge which were hard to restrain” মাওলানা আহমদ রেজা ছিলেন একজন ফলপ্রসু লেখক। তিনি বিশালাকার প্রবন্ধ ও নিবন্ধ রচনা করেছেন।এর একমাত্র কারণ তাঁর মস্তক ও হৃদয় উভয়ই প্রচান্ডাকারে জ্ঞান পিপাসু ছিল,যা সংযম করা ছিল দুঃসাধ্য।
বর্তমান আবিষ্কৃত তথ্যানুযায়ী বিভিন্ন শাখায় লিখিত গ্রন্থাবলীর সংখ্যা হল নিম্নরুপঃ
১.তফসিরে কোরান-------------------------১১টি
২.ইলমে আক্বায়েদ------------------------৫৪টি
৩.হাদিস শাস্ত্র----------------------------১৩টি
৪.ফেক্বা শাস্ত্র ও ফারায়েয--------------------২১৪টি
৫.তাসাউফ,নীতি শাস্ত্র,ইতিহাস------------------১৯টি
৬.অন্যান্য বিজ্ঞান সংযুক্ত শাখা----------------৪০টি
৭.সাহিত্য,ব্যকরণ,অভিধান,ইতিহাস,পদ্য,ভ্রমণ ও অন্যান্য -৫৫টি
৮.মণস্তাত্বিক বিদ্যা----------------------১১টি
৯.জোতিষশাস্ত্র ও জোতির্বিজ্ঞান---------------২২টি
১০.গণিত ও জ্যামিতি-------------------৩১টি
১১.তর্কশাস্ত্র-------------------------৮টি
১২.দর্শন,বিজ্ঞান---------------------৭টি
১৩.বীজগণীত------------------------৪টি
ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহ আলায়হের রচিত গ্রন্থ সমুহের মধ্যে বহুল পরিচত কয়েকটি হলঃ-
১. কানযুল ঈমান ~ প্রবিত্র কুরানের উর্দু ভাষায় বিশুদ্ধ অনুবাদ হল কানযুল ঈমান।সহজ ও সরল ভাষার সাথে ইস লামি আক্বিদা সমুহ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এ সকল ছাড়াও উপরিউক্ত প্রতিটি বিদ্যার উপর প্রায় ১৪০০ পুস্তক তিনি রচনা করেছেন আফশোসের বিষয় এই বিশাল জ্ঞান সমুদ্রের অধিকারি এ মহামানব আজ আমাদের কাছে অপরিচিতএ মহামানব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন বাংলা ভাষায় আমার লিখিতখাতিমুল মোহাক্বিক্বীন”।

পুস্তক  সম্পর্কে আপনার মন্তব্য সাদরে গ্রহনীয়,তবে কোন তথ্য ভুল প্রমানের ক্ষেত্রে এক মাত্র অকাট্য দলীল ছাড়া কক্ষণই গ্রহণীয় হবে না।
            

আজই সংগ্রহ করুন  “তবলীগি জামায়াত প্রসজ্ঞ” লেখক-মুফতী নুরুল আরেফিন রেজবী আল-আযহারী





  




সহযোগী পবিত্র গ্রন্থ সমূহ
1.      কোরান শরীফ                                                                                              
2.      বোখারী রীফ
3.      মুসলিম শরীফ
4.      আবু দাউদ শরীফ
5.      ইব নে মাজা
6.      তির মীযি
7.      নেসাঈ
8.      তাফসীরে রূহুল
9.      তফসীরে জালালাইন
10.  বায়হাক্বী শরীফ
11.  উসুলে বায়দাবী
12.  শারহে আক্বাঈদে নসফী
13.  কানযুল ঈমান
14.  কিতাবুল আরবাইন
15.  আক্বীদাতু তাহাবী
16.  তাবারী
17.  তারীখুল উমাম
18.  আল অফা বি আহওয়ালে মোস্তাফা
19.  তারিখে বাগদাদ
20.  আলামুল মুসলিমীন
21.  মাকানাতুল ইমাম আবু হানীফা
22.  সালাতে মস্উদী
23.  রাদ্দুল মুহতার
24.  কনযুল ইবাদ
25.  কুহস্থানী
26.  ফাত্ওয়ায়ে সূফিয়া
27.  কিতাবুল ফিরদাউসে
28.  কনযুল ইবাদ
29.  আল মাক্বাসিদুল হাসানাহ
30.  শরহে নেকায়ায়
31.  যামীউর রুমুয
32.  ফাতওয়া রেযবীয়া
33.  জা-আল হক্ব
34.  শানে হাবিবুর রহ মান
35.  তোহফাতুল আহূযী
36.  মুসায়েরা
37.  মুসামেরা
38.  বাহারে শরীয়ত 
39.  ফতহুল বারী
40.  তাহযিবুল আসমাওলোগাত
41.  তাহযিবুল তাহযিব
42.  আহসানুল কুবরা
43.  সামাইলে ইমদাদিয়া
44.  ইমদাদুল মুস্তাক
45.  ফায়সালায়ে হফত মাসয়ালা
46.  আশশামামাতুল আম্বারিয়া
47.  আশিকো কি ঈদ
48.  তারিখে দামাস্ক
49.  কেতাবু- শরীয়া
50.  আশ শেফা ফি হুকুকিল মুস্তাফা
51.  খেলাল আস-সুন্নাহ
52.  ফি মাসাইলে ইবনে হানি আন-নেসাপুরি
53.  মুগণী
54.  মজমুউল ফাতোয়া



**************

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন